ইশরাক হোসেনের অভিযোগ: ‘নগর ভবনের লুটপাট রক্ষা করতেই শপথে বাধা’
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণে ইচ্ছাকৃতভাবে বাধা দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ তুলেছেন বিএনপির নেতা ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেন। তিনি বলেন, নগর ভবনকে কেন্দ্র করে যে দুর্নীতির চক্র গড়ে উঠেছে, সেটি চালু রাখতেই তাঁকে শপথ নিতে দেওয়া হচ্ছে না।
আজ শনিবার সন্ধ্যায় জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব মন্তব্য করেন। ইশরাক বলেন, “নির্বাচন কমিশনের গেজেট প্রকাশের পর ২০ দিন পেরিয়ে গেলেও সরকার এখন পর্যন্ত শপথ গ্রহণে কোনো উদ্যোগ নেয়নি। আমি জানতে চাই—এই বিলম্ব কেন? এর পেছনে কি বিশেষ কোনো উদ্দেশ্য আছে?”
‘দলীয় প্রশাসক বসিয়ে ফায়দা লুটার পরিকল্পনা’
নির্দিষ্ট কোনো দলের নাম না বললেও ইশরাক অভিযোগ করেন, “তারা প্রশাসনে নিজেদের লোক বসাতে চায়, যেন পরবর্তী নির্বাচনে সুবিধা আদায় করা যায়। বর্তমানে যেসব ঠিকাদারিসহ নগর ভবনকেন্দ্রিক আর্থিক অনিয়ম চলছে, তা রক্ষা করতেই তারা আমার শপথ ঠেকানোর পাঁয়তারা করছে।”
উল্লেখ্য, ২৭ মার্চ ঢাকার প্রথম যুগ্ম জেলা জজ ও নির্বাচনী ট্রাইব্যুনাল ইশরাক হোসেনকে বৈধ মেয়র হিসেবে ঘোষণা করেন। এরপর ২৭ এপ্রিল নির্বাচন কমিশন গেজেট প্রকাশ করে। কিন্তু এখনও তাঁকে শপথ গ্রহণের সুযোগ দেওয়া হয়নি।
আইনি প্রক্রিয়ার অজুহাত ও সময়ক্ষেপণ
ইশরাক জানান, গেজেট প্রকাশের পর নির্বাচন কমিশন স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়কে চিঠি দিলেও, সেখান থেকে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। বরং বৃহস্পতিবার মন্ত্রণালয় আইন ও বিচার বিভাগে নতুন করে চিঠি দিয়েছে, যাতে ইসি আপিল করবে কি না, সেই বিষয়টি যাচাই করা যায়।
“এটা বোঝা যাচ্ছে—সরকারের ভেতরেই একটি গোপন গোষ্ঠী কাজ করছে, যারা দলীয় স্বার্থ রক্ষা করতে সচেষ্ট,” বলেন ইশরাক।
নগর ভবনে আন্দোলন ও তালা প্রসঙ্গে প্রতিক্রিয়া
নগর ভবনের সামনে আন্দোলন এবং তালা ঝুলিয়ে দেওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, “এই আন্দোলনের আহ্বায়ক আমি নই। কারা তালা দিয়েছে, আমি জানি না। তবে আমি আন্দোলনকারীদের বলেছি, যেন তারা কোনো জনদুর্ভোগ সৃষ্টি না করে। পাশাপাশি আমি তাদের অধিকারও অস্বীকার করতে পারি না, কারণ এই দাবি আদায়ের লড়াই অনেকের।”
সরকারি হস্তক্ষেপে নির্বাচন কমিশনের স্বাধীনতা প্রশ্নবিদ্ধ
সংবাদ সম্মেলনে আরও বলেন, “নির্বাচন কমিশনের কাজের ওপর সরকারি হস্তক্ষেপ শুরু হয়েছে। এটি যদি চলতে থাকে, তাহলে জাতীয় নির্বাচন নিয়েও মানুষের মধ্যে উদ্বেগ তৈরি হবে।”
সূত্র: জাতীয় প্রেসক্লাব, জরুরি সংবাদ সম্মেলন | ইশরাক হোসেন | ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন